বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হচ্ছে ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে নারী শিক্ষার উন্নয়নের জন্য যে কয়টি বিদ্যালয় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছিল, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় তার মধ্যে অন্যতম একটি। ব্রিটিশ স্থাপত্য রীতিতে ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই নয়নাভিরাম দোতলা লাল রংয়ের ভবনটি প্রাচীন ঐতিহ্যের আভিজাত্য নিয়ে এখনও দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে সুপরিচিত। বিদ্যালয়টি ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।

বিদ্যাময়ী -র ইতিহাস:

শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য ১৮৩৫ সালে  তৎকালীন জনশিক্ষা কমিটির প্রেসিডেন্ট লর্ড মেকলে প্রথমে ইংরেজী শিক্ষা প্রবর্তনের সুপারিশ করেন। তার সুপারিশে গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের হাত ধরে ধীরে ধীরে শিক্ষাক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন আসে। এর জন্যই বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১৮৭৩ সালে আলেকজান্ডার উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় নামে নারী শিক্ষা প্রসারে ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রস্থলে স্থাপিত হয়। মুক্তাগাছা, গৌরীপুর এবং কৃষ্ণনগরের জমিদারগণের উদার অর্থানুকূল্যে পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়টির নবরূপায়ন ঘটে। এদের মধ্যে মুক্তাগাছার জমিদার রাজা জগৎকিশোর আচার্য চৌধুরীর বিপুল অর্থদানে এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টির সম্পূর্ণ নতুন পটভূমি রচিত হয়। তাঁর পূণ্যময়ী জননী বিদ্যাময়ী দেবীর নামে আলেকজান্ডার বিদ্যালয়টি বিদ্যাময়ী নাম ধারণ করে এখন সেই থেকে স্বমহিমায় বিরাজমান।

স্থাপনের সুদীর্ঘ একষট্টি বছর পর বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয় ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে। বিদ্যালয়ের প্রাথমিক পর্বে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন নবকুমার সমাদ্দার। বিদ্যালয়টি বিদ্যাময়ী নামকরণ করার সময় দায়িত্বে ছিলেন শ্রীমতী ঘোষ।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যালয়ের লোহার প্রবেশদ্বারটি পেরোলেই রয়েছে পাকা গোল চত্বর দ্বারা ঘেরা বিশাল রাধাচূড়া বৃক্ষ ও বামপাশের পাকাঘাট নির্মিত বিশাল পুকুর। ১৯১২ সালে এখানে একটি দ্বিতল ছাত্রীনিবাস নির্মিত হয়। ১৯২৬ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদধূলিতে ধন্য হয় বিদ্যালয়টি। তখন মিস ভেরুলকার নামে একজন বিদেশী এ বিদ্যালয়টির প্রধান ছিলেন। বিদ্যালয়টি ৩.৫৩২১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।

বিদ্যাময়ী বিদ্যালয়ে রবীদ্রনাথ ঠাকুর

প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম:
১৯৯১ সাল থেকে বিদ্যালয়টিতে ডাবল শিফট চালু হলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩ জন। প্রভাতী শাখা আরম্ভ হয় সকাল ৭.০০ মিনিটে এবং শেষ হয় ১২.০০ মিনিটে। দিবাভাগীয় শাখার কার্যক্রম দুপুর ১২.১৫  মিনিটে আরাম্ভ হয়ে শেষ হয় বিকেল ৫.২৫ মিনিটে।

শিক্ষা সুবিধাসমূহ:

  • দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থসমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার,
  • আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি বিজ্ঞানাগার,
  • কম্পিউটার ল্যাবরেটরি এবং নামাজঘর রয়েছে এই বিদ্যালয়টিতে।

বিদ্যালয়টিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম যেমন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেট আয়োজন করা হয়ে থাকে।

Similar Posts

One Comment

  1. লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
    লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *