ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ।
এটির অবস্থান রাজধানী ঢাকা থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তরে ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম সেরা সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর একটি।
তৎকালীন ১৯২৪ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে বাংলার গভর্নরের নামে বাঘমারা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় “লিটন মেডিকেল স্কুল” এবং এই প্রতিষ্ঠানে চার বছর মেয়াদী এল.এম.এফ. কোর্স চালু ছিল। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে একে “ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ”-এ উন্নীত করা হয়। তখন মাত্র ৩২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কলেজের প্রথম ব্যাচ “ম-০১”-এর যাত্রা শুরু হয়েছিল।
১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ইনডোর স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়।।
১৯৭২ সালে বাঘমারা হতে বর্তমান অবস্থানে (চরপাড়া) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ স্থানান্তর করা হয়।
১৯৭৯ সালে অর্থোপেডিক্স বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৯৮১ সালে হাসপাতালে ফ্যামিলি প্ল্যানিং মডেল ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৯৮৮ সালে হৃদরোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৯৯২ সালে সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড আলট্রাসাউন্ড প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং অনুজীববিদ্যা বিভাগ ও প্রাণরসায়নবিভাগ পৃথকীকরণ করা হয়।
২০০০ সালে প্রথম পোস্টগ্রাজুয়েশন কোর্স হিসেবে ডিপ্লোমা ইন চাইল্ড হেলথ চালু করা হয় এবং নিউরোমেডিসিন, নিউরোসার্জারি, শিশু সার্জারি, এন্ডোক্রাইন মেডিসিন ও নেফ্রোলজি বিভাগের যাত্রা শুরু হয়।
২০০২ সালে ২৭টি পোস্টগ্রাজুয়েট কোর্স (এম ডি,এম এস, এম ফিল,এম পি এইচ, ডিপ্লোমা) চালু হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল জার্নাল ইনডেক্স মেডিকাস, পাবমেড, মেডিলাইন এ নিবন্ধিত। অনলাইনে বিশ্বব্যাপী যা বর্তমানে সুলভ।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ উন্নত শিক্ষার পাশাপাশি মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। শহরের চরপাড়া এলাকায় ৮৪ একর এর বিস্তৃত ক্যাম্পাস রয়েছে, ১৬০০ শয্যাবিশিষ্ট ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল যার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া এখানে রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক হোস্টেল, মিলনায়তন, ব্যাংক, মসজিদ, পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র, নার্সিং কলেজ। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যান্টিন রয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণচূড়া চত্ত্বরে প্রতিবছর বসন্তবরণ উৎসব এবং পহেলা বৈশাখ পালিত হয়।
🔅অনুষদ এবং বিভাগসমূহ-
★এনাটমি বা শারীরস্থানবিদ্যা বিভাগ
★ফিজিওলজি বা শারীরতত্ত্ব বিভাগ
★বায়োকেমিস্ট্রি বা প্রাণরসায়ন বিভাগ
★ডেন্টাল সার্জারী বিভাগ
★মাইক্রোবায়োলজি বা অণুজীববিদ্যা বিভাগ
★ফার্মাকোলজি বিভাগ
★প্যাথলজি বা রোগতত্ত্ব বিভাগ
★কমিউনিটি মেডিসিন
★ফরেনসিক মেডিসিন
★মেডিসিন
★ইন্টারনাল মেডিসিন
★শিশুরোগবিজ্ঞান বিভাগ
★স্নায়ুরোগতত্ব বিভাগ
★মানসিকরোগতত্ব বিভাগ
★নেফ্রোলজি বিভাগ
★হেপাটোলজি বিভাগ
★চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ
★গ্যাস্ট্রো-এন্টারোলজি বিভাগ
★রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ
★রক্তরোগ বিভাগ
★ট্রান্সফিউসন মেডিসিন বিভাগ
★হৃদরোগবিভাগ
★ফিসিওথেরাপি বিভাগ
★কর্কটরোগবিদ্যা বিভাগ
★এন্ডোক্রাইন বিভাগ
★সার্জারি বা শল্যচিকিৎসাবিদ্যা বিভাগ
★জেনারেল সার্জারি
★চক্ষুরোগবিদ্যা বিভাগ
★নাক কান গলা বিভাগ
★স্নায়ুশল্যচিকিৎসা বিভাগ বা নিউরোসার্জারি
★শিশুশল্যচিকিৎসা বিভাগ
★অর্থোসার্জারি বিভাগ
★অবেদনবিজ্ঞান বিভাগ
★বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ
★ইউরোসার্জারি বিভাগ
★স্ত্রী ও প্রসূতিরোগ বিভাগ
🔅সংগঠন
★মেডিসিন ক্লাব
★সন্ধানী
★লিও ক্লাব
★রোটার্যাক্ট ক্লাব
★অক্ষর পরিবার
★স্পন্দন
★বৃত্ত
★ময়মনসিংহ মেডিকেল ডিবেটিং সোসাইটি(এম.এম.ডি.এস)
★ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ফোটোগ্রাফী সোসাইটি(এম.এম.সি.পি.এস)
*কৃতি শিক্ষার্থী
ষাটের দশক থেকে শুরু করে দেশের বহু কৃতি চিকিৎসক এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
★লোটে শেরিং, ভূটানের প্রধানমন্ত্রী।
★টান্ডি দর্জি, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
★মেহদী হাসান খান, অভ্র কী-বোর্ডের উদ্ভাবক।
সহ আরো অনেকেই।
এ কলেজ ৫ বছর অধ্যয়ন এবং ১ বছর শিক্ষানবিশের ভিত্তিতে এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। এছাড়াও স্নাতকোত্তর কোর্স রয়েছে। এই কলেজে প্রতি বছর এমবিবিএস কোর্সের জন্য ২৩০ জন বাংলাদেশি এবং ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ও বিডিএস কোর্সের জন্যে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এটি একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যদিও প্রশাসনিকভাবে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের নিয়ন্ত্রণাধীন।
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।