শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ

ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল মোড়ে অবস্থিত একটি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এটি ময়মনসিংহ শহরের অন্যতম সেরা কলেজগুলোর একটি। কলেজটিতে বর্তমানে প্রায় ৩৪০০ শিক্ষার্থী ও অর্ধশতাধিক শিক্ষক রয়েছেন।

কলেজটি ১৯৯৯ সালের ১লা জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ তৌহিদ। ১৯৮৯ সালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর কয়েকজন প্রিয় ছাত্র, সহকর্মী এবং গুণগ্রাহী তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনকে ধরে রাখার জন্য  ময়মনসিংহ শহরে প্রতিষ্ঠা করেন “শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ“। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের ১ জুলাই শহরের প্রাণ কেন্দ্রে শ্যামাচরণ রায় রোডে কাশি কিশোর কারিগরি বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত একখণ্ড বাড়ীতে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় “শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ”।

১৯৮৯ সালে “শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ” প্রতিষ্ঠার পরপরই এই মহান ব্যক্তির স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার উদ্দেশে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উঠে আসে সংগঠনের সভাগুলোতে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহ শহরে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ছাত্রদের পড়ার জন্য একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান আনন্দ মোহন কলেজ থেকে সরকারি নির্দেশের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি উঠিয়ে দেওয়া হলে অভিভাবকগণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েনে। এছাড়া শহরের অন্যান্য বেসরকারি কলেজগুলো গুণগত মান সম্পন্ন না হওয়ায় কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানকে সরকার সরকারীকরণ না করায় বিষয়টি ময়মনসিংহবাসীর দাবীতে পরিণত হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

তারপর ১৯৯৮ সালে ২৮ আগস্ট শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের সভায় একটি মান সম্পন্ন এবং শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আলোচ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। বেসরকারী ল্যাবরেটরী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সে সভায় প্রধান আইনজীবী এবং স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক এম. জুবেদ আলী সাহেবের সভাপতিত্বে ময়মনসিংহ শহরে একই নামে একটি সরকারি ও একটি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থাকায় বেসরকারি ল্যাবরেটরী উচ্চ বিদ্যালয়টির নামটি পরিবর্তন করে “সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্কুল এন্ড কলেজ” করার জন্য প্রস্তাব করেন এবং এটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং এক পত্রের মাধ্যমে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে বিষয়টি সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করার এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। বিষয়টি সবার মাঝে জানাজানি হলে স্কুলটির সিংহভাগ অভিভাবক সমর্থন জ্ঞাপন করেন। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ. কাসেম তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের ৬ মে জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যালয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের এক সাধারণ সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন আনন্দ মোহন কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুল ইসলাম, পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আবুল কালাম, নেত্রকোণা সরকারী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মজিবর রহমান, আনন্দ মোহন কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মুজিবুর রহমান। সভায় প্রখ্যাত শিক্ষাবিদগণ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দ্যোগকে এবং কলেজটি প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রদানের অঙ্গীকারবদ্ধ হন। ফলে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের গতিবৃদ্ধি পায়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২০ সদস্য বিশিষ্ট কলেজ সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *